ই পর্চা কি, ই পর্চা কাকে বলে | e-Porcha সম্পর্কে সকল তথ্যসেবা
ই পর্চা কি, ই পর্চা কাকে বলে, ই পর্চা বলতে কি বুঝায়, কত প্রকার ও কি কি এবং অনলাইন ই পর্চা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন এখানে।
ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তেই অনেক বেশি লক্ষ্যণীয়। মানুষের সম্পত্তির বন্টন, মালিকানার তথ্য নিশ্চিত করুন, জমির সীমানা নির্ধারণ, পরিমাণ নির্ধারণ ইত্যাদি যাবতীয় কাজে ব্যাপক জটিলতা দেখা দেয়। তাই এ সকল জটিলতা এড়িয়ে সাধারণ নাগরিকদের সুশৃংখল ভূমি সেবা সরবরাহের জন্য ই-পর্চা সেবা দেওয়া হয়।
পর্চার প্রচলন হয়েছিল প্রায় দেড়শ বছরেরও বেশি সময় ধরে। হয়তোবা তারও আগে থেকেই এর ব্যবহার হচ্ছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত এর গুরুত্ব মানুষের জীবনে কমেনি। তাই এমন গুরুত্বপূর্ণ এই ডকুমেন্টটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে নিন।
পর্চা কি?
একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ভূমি জরিপ চালিয়ে, সেই এলাকার অন্তর্ভুক্ত সকল জমির মালিকানার তথ্য, দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ ইত্যাদির বিস্তারিত তথ্য নিয়ে যেই রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়, সেটিই পর্চা।
জমির মালিকানা তথ্য নিশ্চিত করতে, জমির সীমানা নির্ধারণ করতে, জমির দাগ নম্বর অনুযায়ী জমির পরিমাণ জানতে ইত্যাদি বিভিন্ন কাজে এই পর্চার গুরুত্ব অনেক। তাই জমি বেচাকেনা করার আগেও প্রায় সকলেই সেই জমির পর্চার তথ্য চেক করে নেয়।
ই পর্চা কি | ই পর্চা কাকে বলে?
ই পর্চা বা E porcha হলো ইলেকট্রনিক পর্চা সেবা। সাধারণত কোন নির্দিষ্ট এলাকায় ভূমি জরিপ চালিয়ে, সেখানের সকল জমিগুলোর দাগ নম্বর, জমির পরিমাণ, মালিকদের নাম ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করে যেই রেকর্ড প্রস্তুত করে অনলাইনে আপলোড করা থাকে, সেটিকে ই পর্চা বলা হয়।
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, বাংলাদেশের নাগরিকদেরকে পর্চা সম্পর্কিত সেবা অনলাইনে সরবরাহ করার জন্য, যাবতীয় তথ্য dlrms.land.gov.bd সার্ভারে আপলোড করা থাকে। সেখান থেকে অনলাইনে পর্চা সেবা পাওয়াকেই ই পর্চা বলা হয়।

ই-পর্চা বলতে কি বুঝায়?
যখন পর্চা বা খতিয়ান সম্পর্কিত নাগরিক সেবা বাংলাদেশের সকল নাগরিকদেরকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রদান করা হয়, সেটিকে ই-পর্চা সেবা বলা হয়ে থাকে। বর্তমানে অনলাইনেই যেকোনো বাংলাদেশী নাগরিক একটি স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই নিজেদের জমির ই-পর্চা রেকর্ড চেক করে নিতে পারে।
তাছাড়া কারো যদি ই পর্চা খতিয়ানের অনলাইন কপি বা সার্টিফাইড কপির প্রয়োজন হয়, তাহলেও তারা অনলাইনেই আবেদন করতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ
মাঠ পর্চা কাকে বলে?
কোন নির্দিষ্ট এলাকার ভূমি জরিপকালে চূড়ান্ত রেকর্ড/ খতিয়ান প্রস্তুত করার আগে, যেই খসড়া খতিয়ান/ রেকর্ড প্রস্তুত করা হয়, তাকে মাঠ পর্চা বলা হয়। মাঠ পর্চা হলো এক ধরনের প্রস্তুতিমূলক বা পরীক্ষামূলক পর্চা।
এই মাঠ পর্চাকে পরবর্তীতে রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সত্যায়ন করে এবং প্রয়োজনীয় ভুল সংশোধন করে চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়ে থাকে। চূড়ান্ত ভাবে প্রকাশিত সেই জমির রেকর্ডকেই পর্চা বলা হয়।
অনলাইন ই পর্চা সম্পর্কে আরও তথ্য
জমির খতিয়ান ই পর্চা কি?
কোন নির্দিষ্ট এলাকায় ভূমি জরিপ চালিয়ে, সেই এলাকার জমি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যের রেকর্ড প্রস্তুত করার পর অনলাইনে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সার্ভারে যেই খতিয়ান/ পর্চা আপলোড করা হয়, সেটিকে জমির খতিয়ান বা ই পর্চা বলা হয়।
সাধারণত আমরা ই পর্চা এবং খতিয়ান, এই দুটি শব্দকে একই অর্থে ব্যবহার করে থাকি। উভয় শব্দ দিয়েই জমির মালিকানার তথ্যের রেকর্ডকেই বুঝানো হয়।
ই পর্চা app কোনটি?
যেই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে ই পর্চা বা খতিয়ানের তথ্য যাচাই করা যায়, সেটিকেই ই পর্চা app হিসেবে বলে থাকি। বর্তমানে ই পর্চা বা খতিয়ান অনুসন্ধান করার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত সরকারি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন টি হলো DLRMS।
গুগল প্লে স্টোরে গিয়ে DLRMS লিখে সার্চ করলেই এই App টি পেয়ে যাবেন। তারপর সেটি ইন্সটল করে আপনার প্রয়োজন অনুসারে জমির বিভিন্ন ধরনের খতিয়ান/ ই-পর্চা অনুসন্ধান করতে পারবেন।
ই পর্চা আবেদন বলতে কি বুঝায়?
সাধারণত ই পর্চা আবেদন বলতে ই পর্চার অনলাইন কপি বা সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করার আবেদনকে বুঝানো হয়। DLRMS Land Gov BD ওয়েবসাইটে আপনার জমির ই পর্চা অনুসন্ধান করে, তারপর সেই পর্চার কপির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ১০০ টাকা ফি প্রযোজ্য থাকে।
ই পর্চা বের করার নিয়ম কি?
অনলাইন থেকে ই পর্চা বের করার জন্য, dlrms.land.gov.bd ওয়েবসাইটে ভিজিট করে সার্ভে খতিয়ান ক্যাটাগরি সিলেক্ট করবেন। তারপর আপনার জমির বিভাগ>জেলা>উপজেলা>খতিয়ানের ধরন>মৌজা সিলেক্ট করলে খতিয়ানের তালিকা পাবেন। সেই তালিকা থেকে আপনার খতিয়ানটিতে দুইবার ক্লিক করলেই ই পর্চা বের করতে পারবেন।

www eporcha gov bd ই পর্চা কি?
www eporcha gov bd ই পর্চা হলো e-porcha সম্পর্কিত সরকারি ওয়েবসাইট। এর মাধ্যমে জমির পর্চা বা খতিয়ান অনুসন্ধান করা যায়। পাশাপাশি খতিয়ানের অনলাইন কপি বা সার্টিফাইড কপি ডাউনলোড করার জন্যও আবেদন করা যায়।
তবে বর্তমানে এই ওয়েবসাইটে সরকারি সেবা সমূহ দেওয়া হয় না। বরং ই পর্চার সরকারি ওয়েবসাইট পরিবর্তন করে dlrms land gov bd করা হয়েছে। তাই এখন থেকে ভূমি সংক্রান্ত সেবা পেতে www eporcha gov bd ভিজিট না করে, dlrms.land.gov.bd সাইটে ভিজিট করবেন।
ই-পর্চা সেবা কি?
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পর্চা সম্পর্কিত যেই নাগরিক সুবিধাসমূহ সরবরাহ করা হয়, সেগুলোকেই ই-পর্চা সেবা বলা হয়ে থাকে। এই সেবার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে-
- ই পর্চা খতিয়ান অনুসন্ধান
- আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান
- বি আর এস খতিয়ান যাচাই
- নামজারি খতিয়ান যাচাই
- বি এস খতিয়ান যাচাই
- এস এ খতিয়ান অনুসন্ধান
- সি এস খতিয়ান অনুসন্ধান
- দিয়ারা খতিয়ান যাচাই
- পেটি খতিয়ান অনুসন্ধান
- মৌজা ম্যাপ ও জমির নকশা ডাউনলোড
- জমির খতিয়ান ডাউনলোড ইত্যাদি।
পর্চা কত প্রকার?
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৯ ধরনের পর্চার ব্যবহার দেখা যায়। এগুলো হলো:
- বি আর এস পর্চা
- আর এস পর্চা
- বি এস পর্চা
- এস এ পর্চা
- সি এস পর্চা
- নামজারি পর্চা/ খতিয়ান
- মাঠ পর্চা
- দিয়ারা পর্চা/ খতিয়ান
- পেটি পর্চা/ খতিয়ান
ই পর্চা লগইন কিভাবে করবো?
সাধারণত ই পর্চা সম্পর্কিত নাগরিক সেবা পেতে ভূমি মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে একটি নাগরিক একাউন্ট রেজিস্টার করতে হয়। পরবর্তীতে সেই একাউন্টে লগইন করে যাবতীয় সুবিধাসমূহ উপভোগ করা যায়। এখানে ই পর্চা লগইন বলতে সেই সরকারি ওয়েবসাইটের লগইন করার পদ্ধতিকে বোঝানো হয়েছে।
বর্তমানে E porcha সম্পর্কিত সেবা পাওয়া যায় land.gov.bd ওয়েবসাইটে। তাই সেই ওয়েবসাইটেই একটি নাগরিক অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার করে লগইন করতে পারবেন।
ই পর্চা কি ধরনের সেবা?
ই পর্চা হলো জমিজমা/ ভূমি সংক্রান্ত অনলাইন ভিত্তিক সরকারি নাগরিক সেবা। জমির মালিকানা সংক্রান্ত যাবতীয় সুবিধা ভোগ করতে Eporcha এর ব্যাপক প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বর্তমানে অনলাইনে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এবং DLRMS মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে এই সরকারি সেবাটি পাওয়া যায়।
ই পর্চা English কিভাবে পাবো?
সাধারণত বাংলাদেশের ই পর্চাগুলো বাংলা ভাষায় লেখা থাকে। তাই ই পর্চা English ভাষায় পাবেন না। অন্যদিকে, ই পর্চা শব্দের ইংরেজি হলো Eporcha বা e-Porcha।